মানসম্মত শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড । তাই মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম যে অহী নাজিল করেছেন তার প্রথম শব্দ ছিল ‘ইকরা’ বা পড়ো। পৃথিবীর সকল দার্শনিক জ্ঞানার্জনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। বিশ^ মানবতার মহান শিক্ষক আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৌলিক জ্ঞানার্জনকে সবার জন্য ফরয করেছেন। বর্তমান বিশ^ সভ্যতার নেতৃত্বদানকারী বিশ^সংস্থা জাতিসংঘও জ্ঞানার্জনকে বাধ্যতামূলক করেছে।
শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সরকার শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে যথেষ্ট প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যেমন স্কুল বেইজড অ্যাসেসমেন্ট চালু, সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ইত্যাদি। কিন্তু শিক্ষকগণ প্রস্তুত না হলে এর কোনো উদ্যোগই সফল হয় না।
বর্তমানে শিখন কার্যক্রম অনেকটা পরীক্ষানির্ভর। শিক্ষার উদ্দেশ্য কতটা অর্জিত হলো তারচেয়ে গুরুত্ব পায় শিক্ষার্থী কতটা ভালো ফলাফল করলো তার ওপর। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভালোভাবে যথোপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারলে শিক্ষার্থী যেমন সত্যিকারের মানুষ হতে পারবে তেমনি তার ফলাফলও সন্তোষজনক হবে।
আমাদের প্রচলিত সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষয়িক জীবনের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় অনেক বিষয়সহ স্বল্প পরিসরে ধর্ম ও নৈতিকতা শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষাধারায় বিশেষ করে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাধারায় বৈষয়িক বিষয়সমূহ শেখানোর পাশাপাশি আরবি ভাষা, কুরআন, হাদীস ও আকাঈদ-ফিকহ শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে মাদ্রাসা শিক্ষাধারা থেকে যারা ভালোভাবে এবং মনোযোগ সহকারে পড়াশুনা সমাপ্ত করছে তাদের অনেকে চৌকস ও অলরাউন্ডার জনশক্তি হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে। ইদানিং যার প্রতিফলন হিসেবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংখক ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে এবং বিসিএস পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় ফলাফল করছে।
আমাদের দেশে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে পারদর্শী করার জন্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুল যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ইংলিশ ভার্সনে ন্যাশনাল ক্যারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের আয়োজন। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এমন কোনো মাদ্রাসা নেই যেখানে পড়াশুনা করে ইংরেজি ও আরবির মত দুটো গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় দক্ষ হয়ে গড়ে ওঠা যায়। অথচ সময়ের চাহিদা অনুযায়ী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আরবি ও ইংরেজি- উভয় ভাষায়ই সমান দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। তাহলে তাদের জন্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের সাথে বৈষয়িক যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি তাদের ভালো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে।
এ চাহিদাকে সামনে রেখে ‘অ্যাডভান্সড এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ যুগের চাহিদা মেটাতে প্রতিষ্ঠা করেছে কিছু আকর্ষণীয় ব্যতিক্রমসহ মাহারাত মডেল মাদ্রাসা। সাধারণ শিক্ষার পাশাপশি ফাউন্ডেশন অত্যাধুনিক হিফযুল কুরআন বিভাগও চালু করেছে।
আমাদের চারপাশে মাদ্রাসার সংখ্যা কম নয়। তবে মানসম্পন্ন মাদ্রাসার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই মানসম্পন্ন শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এ প্রতিষ্ঠান দঅ গধফৎধংধয রিঃয ধহ ঊীপবষষবহপব’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এমন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যা জাতির প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।
ড. মো. নূরুল্লাহ
চেয়ারম্যান, পরিচালনা কমিটি
মাহারাত মডেল মাদ্রাসা